শিক্ষা ও স্বপ্নের পথে এগিয়ে চলুক কন্যাশিশু, থামুক বাল্য বিবাহ

শিশুর স্বপ্নের পথে বাঁধা নয় বাল্য বিবাহ নতুন প্রত্যয়ে কাজ করছে আমাল ফাউন্ডেশন ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।


আমরা জানি, শিক্ষা শুধু একটি শিশুর ভবিষ্যৎ নয়, পুরো জাতির উন্নতির চাবিকাঠি। তবে এখনও দেশের অনেক অঞ্চলে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্য ও সামাজিক কুসংস্কারের কারণে মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এই বাস্তবতাকে পরিবর্তন করতেই আমাল ফাউন্ডেশন ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করছে শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের আওতায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ঋণ (Child Marriage Prevention Loan - CMPL) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

এই প্রকল্পের আওতায় রামু উপজেলা থেকে ২৫ জন এবং টেকনাফ উপজেলা থেকে ১৫ জন পরিবারকে ২৫,৫০০ টাকা করে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। এই ঋণ প্রদান করা হচ্ছে শুধুমাত্র সেইসব পরিবারকে, যাদের ঘরে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী স্কুলগামী কন্যাশিশু রয়েছে। মূল লক্ষ্য হলো-এই পরিবারগুলোর অভিভাবকদের উৎসাহিত করা যেন তারা তাদের মেয়েদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে ও সম্পূর্ণ করতে উদ্বুদ্ধ হন এবং ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেওয়ার চিন্তা থেকে সরে আসেন।

এই প্রকল্পের অধীনে, কক্সবাজার জেলা (রামু, উখিয়া এবং টেকনাফ) এর মোট ৩০০ পরিবারকে ঋণ প্রদান করা হবে, যা ওয়াল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর সহায়তায় এবং আমল ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজন করা হবে।

আমরা জানি, অর্থনৈতিক সংকট অনেক সময় পরিবারগুলোকে বাধ্য করে মেয়েদের ছোট বয়সেই বিয়ে দিতে। কিন্তু এই ঋণের মাধ্যমে আমরা তাদের দেখাতে চাই যে, শিক্ষা সম্পন্ন করেও কন্যাশিশুর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে। মেয়েরা যদি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে তারা স্বাবলম্বী হয়ে নিজ পরিবারকেও সহায়তা করতে পারবে। তাই এই উদ্যোগ শুধু মেয়েদের জীবন বদলানোর জন্য নয়, বরং একটি সচেতন সমাজ গড়ে তোলার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

আমাল ফাউন্ডেশন ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ বিশ্বাস করে প্রত্যেক শিশুর অধিকার আছে স্বপ্ন দেখার, বড় হওয়ার এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা কন্যাশিশুর অধিকার রক্ষায়, শিক্ষা বিস্তারে এবং বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চাই। আমরা আশা করি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে আরও অনেক পরিবার অনুপ্রাণিত হবে এবং নিজেদের মেয়েদের স্বপ্নপূরণের সুযোগ দেবে।

আমরা আপনাদের পাশে চাই-আসুন একসাথে কাজ করি, যেন বাংলাদেশের প্রতিটি কন্যাশিশু নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারে, তার শিক্ষা সম্পূর্ণ করতে পারে, এবং নিজের জীবন নিজে গড়ে তুলতে পারে।

Post a Comment

0 Comments