তেল মূল্যে বৃদ্ধি, বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

তেল মূল্যে বৃদ্ধি, বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া – ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জেরে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে
তারিখ: ২৩-০৬-২০২৫


তেল মূল্যে সামান্য বৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের শক্তিশালী অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে সোমবার, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনে চালানো হামলা বিশ্ববাজারে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এশিয়ার বাজার খোলার সাথে সাথেই ব্রেন্ট ক্রুড এবং মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) তেলের দাম ৪% এর বেশি বেড়ে জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়, যদিও দুপুরের পর তা ১.১% প্রবৃদ্ধিতে স্থির হয়। ব্রেন্ট প্রতি ব্যারেল ৭৮.০৮ ডলারে এবং WTI ৭৪.৮৯ ডলারে লেনদেন হচ্ছিল।

এই মূল্যবৃদ্ধি প্রতিফলিত করছে সম্ভাব্য তেল সরবরাহে বিঘ্নের আশঙ্কা—বিশেষ করে যদি ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে হরমুজ প্রণালী লক্ষ্যবস্তু করে, যা বিশ্বের প্রায় ২০% তেল পরিবহন করে।

পেপারস্টোন-এর ক্রিস ওয়েস্টন বলেন, "ইরানের হয়তো হরমুজ প্রণালী পুরোপুরি বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। শুধু অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেই তারা সামুদ্রিক পরিবহন ব্যয় বাড়াতে পারে, যা একাই অপরিশোধিত তেল ও গ্যাস সরবরাহে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।"

তবে আশার কথা হলো, স্যাটেলাইট তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেল পরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে, যার ফলে বাজারে প্রতিক্রিয়া সীমিত ছিল। সুইসকোট ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ইপেক ওজকারদেশকায়া বলেন, "অনেকেই আশা করছেন ইরান সরাসরি বড় পাল্টা আঘাত এড়াবে। ব্যাপক সংঘাত ইরানের নিজস্ব তেল অবকাঠামোকেও হুমকির মুখে ফেলবে এবং চীন, তাদের সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা, ক্ষুব্ধ হতে পারে।"

তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিচ্ছেন, উত্তেজনা আরও বাড়লে মার্কিন তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা এশিয়ার তেল-নির্ভর অর্থনীতিগুলোর জন্য বড় ধাক্কা হবে। MUFG-এর অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, “তেলের দামে ধাক্কা এ অঞ্চলের শক্তিনির্ভর দেশগুলোর জন্য বাস্তব নেতিবাচক প্রভাব ডেকে আনবে।”

Post a Comment

0 Comments