বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর ক্ষমতায়ন ও ভূমিকা মূল্যায়নের দাবিতে কক্সবাজারে প্রচারাভিযান





আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর অংশগ্রহণ, ক্ষমতায়ন, জ্বালানি অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নীতি নির্ধারক হিসেবে নারীর ভূমিকা মূল্যায়নের দাবিতে কক্সবাজারে এক ব্যতিক্রমী প্রচারাভিযানের আয়োজন করা হয়েছে।

৮ মার্চ সকালে লালদিঘীর পাড় চত্বর থেকে র‍্যালি শুরু হয়ে কক্সবাজার পৌরসভার সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট নারী নেত্রী এডভোকেট সাকি এ কাউসার।

সমাবেশে বক্তব্য প্রদান
সমাবেশে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ফোরাম, কক্সবাজারের সদস্য সচিব মিজানুর রহমান বাহাদুর এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন—
🔸 এডভোকেট লিপিকা পাল
🔸 আদিবাসী পরিষদ নেত্রী মা টিন টিন রাখাইন
🔸 ওয়াইসিএন সদস্য হালিমা আক্তার
🔸 স্টুডেন্টস প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক রিচি মনি

উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ কর্মী রতন দাশ, সুজলা সুফলা মহিলা উন্নয়ন সমিতির কামাল উদ্দিন এবং যুব সংগঠক আবদুল মাবুদ বাবু প্রমুখ।

প্রচারাভিযানের লক্ষ্য
সংশপ্তক, ক্লিন (কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক) এবং বিডাব্লিউজিইডি (বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট) এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল—
✔️ সারাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করা
✔️ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর অন্তর্ভুক্তি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা নিশ্চিত করা

নারীদের অংশগ্রহণ ও সমস্যা তুলে ধরা
সমাবেশে সংশপ্তকের পরিচালক অগ্রদূত দাশগুপ্ত বলেন, “দেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির ৪৬ শতাংশই ব্যবহার হয় গৃহস্থালির কাজে। ফলে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হলে নারীরাই বেশি ভুক্তভোগী হন।”

তিনি আরও বলেন, “নারীরা জ্বালানি খাতে পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, উৎপাদন এবং বিতরণে প্রায়ই বঞ্চিত হন। সারাদেশে নারীদের মালিকানায় মাত্র ২-৪ শতাংশ জমি থাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের এড়িয়ে যান। ফলে তারা পরামর্শ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সুবিধাভোগী হিসেবে বিবেচিত হলেও সক্রিয় অংশীদার বা নীতিনির্ধারক হিসেবে স্বীকৃতি পান না।”


ভূক্তভোগী নারীদের অভিজ্ঞতা

প্রচারাভিযানে অংশ নেওয়া মিফতা বুলবুল বলেন, “বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নারীদের বিশেষ প্রয়োজন, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করে। জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, সালফার ও ক্রোমিয়াম নারীদের স্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। তবুও ক্ষতিপূরণের কোনো সুযোগ নেই, কারণ জমির মালিকানা সাধারণত নারীদের নামে থাকে না।”

সরকারের প্রতি আহ্বান
প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার এবং জ্বালানি খাতে নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা সহজলভ্য সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বার্তা প্রেরক:
মিজানুর রহমান বাহাদুর, সদস্য সচিব, হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার ফোরাম, কক্সবাজার

Post a Comment

0 Comments