বাংলাদেশে প্রথম রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রবেশ ঘটে ১৯৭৮ সালে। ওই সময় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর পরিচালিত "নাগা মিন" (Operation Nagamin) অভিযানের ফলে প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এরপর আরও কয়েক দফায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে, বিশেষ করে ১৯৯১-৯২ সাল এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের কারণে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা যায় রোহিঙ্গা শরণার্থী সংখ্যা ১২ লাখ। তারমানে কক্সবাজার জেলার মোট স্থানীয় জনসংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীর ১২ লাখ সংখ্যাসহ প্রায় ৩৭ লাখে পৌঁছেছে। জেলার স্থানীয় পরিবার বাদ দিলেও এই কলাম লিখতে লিখতে হয়তো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোন পরিবারে সন্তান ভূমিষ্ট হয়েছে বা হবে। #কক্সবাজার জেলার আয়তন হচ্ছে ২৪৯২ বর্গ কিলোমিটার। এতো জনসংখ্যার বহনভার এই ছোট্ট আয়তনের জেলা কিভাবে সইবে? এবার আসা যাক, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো (রিপ্যাট্রিয়েশন) সম্ভব না হওয়ার পেছনে বেশ কিছু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কারণ রয়েছে। প্রধান কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:-
দেশীয় কারণঃ
মিয়ানমারের অনীহা
মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করতে চায় না এবং তাঁদের নাগরিকত্ব প্রদানে অনীহা দেখাচ্ছে।
তারা রোহিঙ্গাদের "বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী" হিসেবে প্রচার করছে, ফলে পুনর্বাসনে আগ্রহী নয়। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক অভিযানের পর থেকে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সরকারের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছে।
নিরাপত্তার অভাব
বাংলাদেশ থেকে ফিরে গেলে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আবারও নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণহত্যার শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
মিয়ানমার এখনো রাখাইন রাজ্যে তাদের জন্য নিরাপদ ও মানবিক জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। আগেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে বাস্তবায়িত হয়নি, তাই রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে ভয় পাচ্ছে।
বাংলাদেশের সীমিত কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ
বাংলাদেশ বারবার কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা করলেও মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করতে পারেনি। হয়তো কূটনৈতিকদের ভারত একচেটিয়াভাবে তাঁদের না ভোটের ঝাঁতাকলে পিষ্ট করতে গোপনে অপকৌশল চালাতে পারে।
চীন, ভারত ও আমেরিকার রাজনৈতিক ও পরাশক্তির বলয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশেষ করে ভারত চাইবে এটিকে জিইয়ে রাখতে ভৌগলিক ও রাজনৈতিক ইস্যু সম্পর্কিত কারণে। ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য সহ আধিপত্য বিস্তার করতে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমাধানের পথে বাঁধাগ্রস্থ করতে চেষ্টায় থাকতে পারে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় মিয়ানমার একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে। এভাবে বাংলাদেশ ত্রি-রাষ্ট্রের স্বার্থের মারপ্যাঁচে পড়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন আশার মুখ দেখছে না।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিভিন্ন দলের এজেন্দা বাস্তবায়নের জেরে নানাবিধ কোন্দলের কারণে চীন, মায়ানমার ও ভারতের সাথে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা যেখানে সেখানে যেকোন গণতান্ত্রিক দেশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে বারংবার ব্যর্থ হয়।
আন্তর্জাতিক কারণ
চীনের ভূমিকা
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশের পিছনে চীনের গুপ্ত অপকৌশল ও ভৌগলিক সম্পর্কের ভুমিকা রয়েছে।
চীন মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ মিত্র। প্রান্তিক পর্যায়ে বললে মামা-ভাগিনা সম্পর্ক। তাই তো মামা-ভাগিনা যেখানে আপদ-বিপদ কিংবা জাতিসংঘের আইনী তোয়াক্কা নাই সেখানে। যার ফলশ্রুতিতে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে চীন চোখ বন্ধ করে মিয়ানমারকে একতরফা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এতে মায়ানমার বগল বাজিয়ে বীরদর্পে মানবতা বিরোধী কার্যক্রমে মরিয়া হয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তাঁদের স্থায়ী আবাসস্থলে ফিরতে দিতে চায় না।
জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে চীন বাধাগ্রস্ত করতে পারে, কারণ তাদের মিয়ানমারে বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে। চীন ব্যবসার কেহেরমান সমতুল্য। সেখানে সততার আলী বাবাকে অগ্নি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
আরাকান রাজ্যে প্রভাব বিস্তার ও নানা কাজে চীনের প্রয়োজনে অবকাঠামো নির্মাণ, স্বাধীনভাবে ভারত ও আমেরিকার বলয়কে নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশকে ভারত কিংবা আমেরিকামুখী হতে বাঁধার উপাদান হচ্ছে এই রোহিঙ্গা শরণার্থী।
বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল অবস্থায় রেখে ত্রি-রাষ্ট্রের সার্বর্ভৌমত্ব হুমকির মুখে রাখা।
রাশিয়া ও ভারতের ভূমিকা
রাশিয়া মিয়ানমারকে অস্ত্র সরবরাহ করছে এবং তাদের সামরিক সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে।
ভারতও কৌশলগত কারণে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে, ফলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিতে দ্বিধাগ্রস্ত।
আন্তর্জাতিক চাপের অভাব
জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা নিন্দা জানালেও মিয়ানমারের ওপর কার্যকর নিষেধাজ্ঞা বা চাপ নেই।
বড় শক্তিগুলোর স্বার্থের কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মিয়ানমারের সামরিক শাসন ও অস্থিতিশীলতা
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক সংকট আরও বেড়েছে।
অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধের কারণে দেশটি রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
আসিয়ান (ASEAN) ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর দুর্বল ভূমিকা
আসিয়ান সাধারণত সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না, ফলে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য সংস্থাগুলো নিষেধাজ্ঞা দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তড়িৎ গতিতে যা করণীয়ঃ
রোহিঙ্গা তাঁদের নিজ জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়ার জন্য চীনের সাথে টেকসই আলাপ-আলোচনা করতে হবে। এটি শুধু চা-চক্র ও মধ্যাহ্নভোজ দিয়ে শেষ করলে হবেনা। স্বার্থ জড়িত থাকতে হবে। যেমন চীন বাংলাদেশের বড় কিছু প্রকল্প নিজ হাতে করতে চাই সেগুলো বাংলাদেশকে তাঁদের কাছে দায়িত্বভার দিতে হবে। বাংলাদেশ যতোদিন ভারতপ্রেমী হয়ে কাজ করবে ততোদিন চীনও এই রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যু বাংলাদেশে জিইয়ে রাখবে।
চীনের সাথে ঐক্যমত্যে না পৌঁছালে যেভাবে হোক প্রয়োজনে আরাকান আর্মির সাথে ছলে, বলে, কৌশলে হালকা-আলগা পিরিতের মাধ্যমে আরাকান রাজ্য দখলে সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। এটি লোপে নিতে হবে ভারত, চীন ও আমেরিকাকে ডিঙ্গিয়ে। আরাকান আর্মিদের সাথে সুম্পর্ক বিনির্মাণে ভৌগলিকভাবে স্থানীয় হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা বা হওয়া উচিত। কোন অবস্থায় অন্য পরাশক্তি দেশগুলোকে নয়। বিশেষ করে ভারতের রাজনৈতিক আয়নাবাজি ও অপকৌশলের মন্ত্রগুলোকে কাজে লাগাতে দেয়া বাংলাদেশের উচিত হবেনা।
বর্তমানে রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে; তাঁদের সাথে আলোচনা করে, সখ্যতা গড়ে তুলে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়ার মোক্ষম সুযোগ হতে পারে। এই সুযোগ হাতছাড়া করলে ভূ-রাজনৈতিক কারণে ভারত ও আমেরিকা এই জনবিস্ফোরণের ইস্যুটিকে জিইয়ে রাখার চেষ্টায় থাকবে। বাংলাদেশের উচিত সেই সুযোগ বর্ণিত দুই দেশকে না দেয়া। তাঁদের আয়নাবাজির রাজনৈতিক কারিশমা থেকে রক্ষা করতে আরাকানের বিদ্রোহীদের সহযোগিতার হাত প্রসার করা।
যেভাবে হোক আরাকান রাজ্য দখল করতে হবে। দখলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্ডার সাইটের আইন-শৃংখলা বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।যদিও প্রত্যেক বাহিনীর প্রধান ও সরকার প্রধানের সহযোগিতার পাশাপাশি জাতিসংঘের হিডেন ভূমিকা থাকতে হবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশ কর্তৃক রোহিঙ্গাকে জোরপূর্বক আরাকান রাজ্যে পাঠিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে ঢিলেঢালাভাবে বারণ করবে কিন্তু ভিতরে-ভিতরে বাংলাদেশের আনঅফিসিয়ালি রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে সহযোগিতা করবে। জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের ডোনেশনে ব্যস্থ থাকলেও প্রত্যাবাসনে তাঁদের ব্যস্থতার তোয়াক্কা নেই বললে চলে। আজ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ফেরার বিষয়ে চোখে পড়ার মতো নজির মিলেনি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা জনগোষ্ঠীর লিডারদের সাথে আলোচনা করে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে তাঁদের আরাকান রাজ্যে চলে যাওয়ার যাবতীয় সহযোগিতা বাংলাদেশ সরকারকে নৌকা, বোট, শীপ, ট্রলারযোগে জলপথে ও স্থলপথ দিয়ে হেঁটে-গাড়ী দ্বারা প্রত্যাবাসনের সু-ব্যবস্থা করতে হবে।
জাতিসংঘের যেকোন মহাসচিব এই রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আরাকান রাজ্যে প্রত্যাবাসনের কাজ করতে জীবনেও পারবে না বা করবেনা। সাবেক ৭ম মহাসচিব জনাব কফি আততা আনান ও ৮ম মহাসচিব বান কি-মুন প্রমুখও পারেননি।
এই জাতিসংঘ শক্তের ভক্ত নরমের জম। শুধুই মার্কিন ডলারের স্বার্থ, খনিজ উপাদান, তাদের ক্ষমতা জিইয়ে রাখা ছাড়া এক সেকেন্ডের জন্য কিছুই বুঝে না। সংগত কারণে জাতিসংঘের সাথে আন্তর্জাতিক আইনের ফরমালিটি বজায় রেখে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে আরাকান রাজ্য দখল করতেই হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশের নীতি-নির্ধারকদের ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজি দ্বারা লক্ষণ সেনকে তাড়ানোর তরিকায় দীক্ষা নিতে হবে। এটি অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারকে জোরালোভাবে নিতে হবে।
বর্তমান বিশ্বে কোন দেশ অন্য দেশকে ভয় পেলে সার্বভৌমত্ব হারানো ছাড়া বিকল্প থাকেনা। আন্তজার্তিক আইন মানতে গিয়ে কক্সবাজার জেলাসহ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের মেরুদন্ড শেষ হতে থাকবে।
আন্তর্জাতিক আইনের কথা আসতে পারে। তাই বলে এটি শুধুমাত্র উন্নয়নশীল দেশ তথা বাংলাদেশকে পালন বা মানতে হবে তা না। ২০১৭ সালে জাতিসংঘ ভারতেও সমহারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে পারতেন বা আশ্রয় দেয়ার জন্য বাধ্য করতে পারতেন। কিন্তু, জাতিসংঘ ভারত ও মায়ানমারের জান্তা সরকারের লোম পর্যন্ত নাড়তে পারে নাই। আইন শুধু বাংলাদেশের উপর বর্তাইবে তাতো হয় না। আইন সবার জন্য সমান। শক্তের ভক্ত নরমের জম নীতিতে কখনো আইন হতে পারে না। এতে সমতা, সম্যবিহীন বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। আর যেখানে বৈষম্য সেখানে জনবিস্ফোরণ ঘটে। সেটা একদিন বা যুগের পর হোক।
কোন্ কোন্ এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে প্রকাশ্যে-গোপনে বাঁধা সৃষ্টি করছে বা করবে তাঁদের নিবন্ধন বাতিলের সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে তড়িৎ গতিতে বিতাড়িত করতে হবে। পাশাপাশি এ সমস্যার সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়ানো, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা অত্যাবশক। সৌদি-আরব, তুরুস্ক সহ ওআইসির সহযোগিতা কামনা করা জরুরি।
ব্যাবিলনীয় সভ্যতার আদতে কাজ করতে হবে। হয়তো আমরা শারীরিকভাবে দাঁতের বদলে দাঁত, চোখের বদলে চোখ নষ্ট করব না। কিন্তু, মায়ানমার জান্তা সরকার যেভাবে গুন্ডামী ও জেনোসাইড করে বল প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের তাড়িয়ে দিয়েছে ঠিক সেইভাবে বাংলাদেশ সরকারকে প্রথমে আরাকান রাজ্য দখল করার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
পরে রাষ্ট্রীয়ভাবে আইন-শৃংখলা বাহিনী, দেশের রাজনৈতিক দল ও স্থানীয় সাধারণ জনগণের মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে গণহারে আরাকান রাজ্যে পাঠিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুর সমস্যা সমাধান করা ব্যতীত আর কোন উপায় আছে বলে মনে হয় না। এটি না করলে ভৌগলিক অবস্থানভেদে কক্সবাজার তথা পুরো বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব হারাতে হয়তো বেশি দিন লাগবেনা।
অতএব, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুয়েতেসের ইচ্ছা-আকাঙ্খা থাকলেও তাঁর পক্ষে রোহিঙ্গাদের ডোনেশনের বিষয়ে উকালতি ছাড়া জাতিসংঘের নিবন্ধিত সকল দেশকে আদেশ দিয়ে চীন-মায়ানমারকে বাধ্যকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন করার কশ্মিনকালেও সম্ভব নয়। আসমানী কোটায় সম্ভব হলেও জাতিসংঘ সহ বিশ্বের জমিনের কোটায় কখনোই আশা করা অবান্তর। এখনই সময় বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকদের অবশ্যই চীন ও ভারতের সুসম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে যেভাবে হোক বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনকে প্রাধান্য দেয়া বুদ্ধিমত্ত্বার পরিচয় বহন করবে। এতে একদিকে চীন রাজি অন্যদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন সম্ভব। মাঝখানে মায়ানমার, ভারত ও আমেরিকার চাওয়া-পাওয়াকে নেয়ামত থেকে কেয়ামতে পরিণত করে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা শরণার্থীর বাড়তি ১২ লক্ষ জনসংখ্যার বোঝার বহনভার হতে রক্ষা করে কক্সবাজার ও ভাসানচর সহ তথা বাংলাদেশকে একটি সতেজ ও প্রাণভরে নিঃশ্বাস গ্রহণের আবাসস্থল করার একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হোক। নইলে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশের প্রত্যাবাসনের স্থায়ী সমাধানের পরিবর্তে তাঁরা কক্সবাজার ও ভাসানচরে পড়ে থাকবে চিরকাল!
তমিজ উদ্দিন,
সোস্যাল ওয়ার্কার ও রিসার্চচার।
0 Comments