বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও অপমানের গল্প!
বিশ্ব শিক্ষক দিবসের ঠিক আগেরদিন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গালি দেয়ার একটা বিশাল উপলক্ষ ফেসবুকীয় আমজনতা পেয়েছিল এবং ইচ্ছেমত গালিও দেয়া হয় শিক্ষকদের।

ঘটনা হল, নোবেল বিজয়ী শিক্ষক ক্লাসে ২-৩ বার ফোন ধরেননি।(অবশ্যই অপরিচিত কলার ছিল),পরে ফোন ধরে বলেছেন, ক্লাশ ব্রেকে কথা বলবেন এবং নোবেল পাবার সংবাদ শোনার পর আবার ক্লাশে যান।
অবশ্যই অসাধারণ। ধন্যবাদ ও সাধুবাদ পাবার যোগ্য।
তবে,আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কি ক্লাশে ফোন এলেই ধরে! ক'জন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ক্লাস আপনি পেয়েছেন। ২০ শতাংশ শিক্ষকের জন্য ৮০ শতাংশকে গালিগালাজ করার যৌক্তিকতা কতটুকু।
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথিতযশা শিক্ষকদের ক্লাস করেছি। কাউকে কখনো ক্লাশ চলাকালীন ফোন এলেই ধরতে দেখি নি।
খুব বেশি হলে,আমি ক্লাশে,পরে ফোন দিবেন বা আমি এক মিনিট, এই ফোন কলটা একটু ধরতে হবে,জরুরি বলে অনুমতি নিয়েছেন। (দায়িত্ব নিয়েই বলছি)
আমি নিজেও দীর্ঘকাল পড়িয়েছি- তিনটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কক্সবাজার বিশ্ববিদ্যালয় , ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ও উত্তরা ইউনিভার্সিটি।কখনো দেখি নি কোন শিক্ষক আগ্রহভরে ফোন ধরেছেন।
যে জাতি সম্মান দিতে জানে না,সে সম্মান পাবেও না।
একটা গল্প বলি -
সাংবাদিক প্রধান শিক্ষককে রেজাল্ট কেন খারাপ হল জিজ্ঞেস করলে, উত্তরে বলেছেন-
"ক্ষুধার্ত শিক্ষক দিয়ে, তৃষ্ণার্ত ছাত্রের, তৃষ্ণা মেটানো যায় না। আপনি তেতুল বিচি রোপণ করবেন,আর আল্লাহকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে বলবেন-
কমলা দাও!
কমলা দাও!
তা কি হয় নাকি!"
তাই যার সাথে তুলনা করেছেন, সেই শিক্ষকের work enviroment, ক্লাশ আনুপাতিক শিক্ষার্থী, বেনিফিটস, স্যালারি রেঞ্জ,রিসার্চ গ্রান্ট ও পারিপার্শ্বিক সামাজিক পরিবেশ বিবেচনা করবেন।
আজ এ' দিনে সকল শিক্ষক ভাল থাকুক।
লেখক : আশফাক আহমেদ আবির স্যার
0 Comments